বোবো স্টেটাস ৪


আমি কি সাংঘাতিক বড় হয়ে গেছি তোমরা কি জানো? গতকাল আমার চার মাস পুর্ণ হল। বেশ কিছুদিন কিছুই লেখা হয়নি, আসলে তখন আমি ছোট ছিলাম তো, বিজি ছিলাম একটু। মাম্মা ড্যাডিও বিজি ছিল। আড়াই মাস বয়সে আমি প্রথম ট্রেনে চাপলাম। গাড়িতে আগেই চেপেছি, বহুবার। ট্রেন কি ভালো কি ভালো, কি সুন্দর দোলু দিয়ে ঘুম পাড়ায়, প্রথমে তো আমি বুঝতেই পারিনি, ড্যাডিবাবু কেন আমাকে নিয়ে ঘুরছে না, তাই একটু কেনেছি। কিন্তু যেই ট্রেন চলতে শুরু করেছে আর আমি একটুও কানু করিনি।


তাপ্পর তো আমি মাম্মা ড্যাডির সাথে হায়দ্রাবাদ এসে পৌঁছলাম। এখানে দেবাশীষ কাকাই আর সুদীপ্তা কাম্মি আছে, আর একটা নতুন দাদুভাই, দিম্মা, পিম আর কাকাই আছে, আমি রোজ তাদের বাড়িতে গল্পগাছা করতে আর আদর খেতে যাই। দেবাশীষ কাকাই আর সুদীপ্তা কাম্মি রোজ আমার সাথে গল্প করতে আসে। ওরা খুব ভালো, সুদীপ্তা কাম্মি কি সুন্দর কোলে নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়।
আরেকজন আছে আমাদের বাড়িতে, বুল্টুজ্যাজা। আমি ডুডি খেতে না চাইলে গম্ভীর হয়ে বলে "ডুডি খেয়ে নাও বোবো!" কিন্তু আমি ফ্যাক করে হেসে ফেলি তাই বুল্টুজ্যাজাও হেসে ফেলে। আমি কাউক্কে ভয় পাইনা।
ভয় পাই প্রেশারকুকারের সিটিকে, মিক্সির আওয়াজে, আর চমকে গেলে। আওয়াজ টাওয়াজ আমার পছন্দ না। আমি ছাড়া আর কিছুতে আওয়াজ করলে আমি খুবই বিরক্ত হয়ে তাকাই। রংচঙে জিনিস আমার হেবি পছন্দ।
বেশ মন দিয়ে আমি আলো আর রঙ দেখি।
আসল কথাটাই তো বলা হয়নি, কাল আমার প্রথম বাইকরাইড হয়েছে। মাম্মা একটা ক্যারিয়ারে আমাকে বুকুমধ্যে আঁটকে নিয়েছে। তাপ্পর বাইকে উঠে আমরা ডাক্কাবাবুর কাছে গেছি। আমার হায়দ্রাবাদের ডাক্কাবাবুর নাম রাজেশ খান্না। তাঁর কাছে গেলেই আমাকে প্রথমে একটা মিত্তি ওষুধ খাইয়েই তাপ্পরে দুই পায়ে পটপট করে ছুঁচ ফুটিয়ে দেওয়া হয়। তাও আমি কাঁদি না।
আসলে খুবই বীর তো। আমি কাঁদলে আমার ভিতু মাম্মা কেঁদে ফেলতে পারে।
বাইকে চড়া ভালো জিনিস, কত কিছু দেখা যায়, হাওয়া হয় বলে আমি ঠিক ভালো দেখতে পারিনা, তাই খুবই ভুরু কুঁচকে থাকি, আর মাম্মাকে শক্ত করে ধরে থাকি। কিন্তু দেখতে মন্দ লাগে না। ফেরার সময় যদিও আমাকে ঠান্ডালাগার ভয়ে মুড়ে রাখা হয়েছিল বলে একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, তবুও বাইকরাইড আমার বেশ লাগে।
পুজো বলে একটা কিছু ব্যাপার আসছে, আমি ঠিক জানিনা সেটা কি। তাতে সম্ভবত ছোটদের অনেক জামা কিনে দেওয়া হয় আর গিফট পাওয়া হয়।
এখনো অবধি আমার ১০টা জামা হয়েছে। আরো হবে হয়তো। বুল্টুজ্যাজা, সামনের বাড়ির দিম্মা আর পিসি সব্বাই আমাকে অনেক অনেক জামা দিয়েছে, নিন্নি আর পিকাইয়ের জামাও অন দ্য ওয়ে।
এত বড় হয়ে গেলাম , কিন্তু এরা এখনো আমাকে ডুডি চালিয়ে যাচ্ছে। আমি খাবারের গন্ধে কত এদিকওদিক তাকাই তবু একটুও দেয় না। নিজেরা সেদিন হোটেলে গিয়ে হেবি হেবি খেয়েছে, আমাকে একটুও দেয়নি জানো? সেই ডুডি আর ডুডি। তাই আজকাল আমি একটু হাত খাই। কিন্তু বেশি সুযোগ পাই না।
আমি প্রচুর বকবক করি ভোরবেলা, ড্যাডি মাম্মা তখন ঘুমু করে, আমি বকে যাই। আজ সেইগুলোই লিখে ফেললাম।
হ্যাপি পুজো সবাইকে। আবার পরে লিখব।

Comments