অঙ্কের সমস্যা


অঙ্ক চিরকালই আমার সমস্যা, কিন্তু সেই কথা এখানে হচ্ছে না, এখানে বলতে এসেছি অঙ্কের নিজস্ব সমস্যাদের কথা। অঙ্কের সংসারে অশান্তিই অশান্তি, সেইজন্যেই অঙ্ক নিজের সমস্যা আমাদের দিয়ে সমাধান করানোর চেষ্টা করে। করবে না? এত ভুলো মন নিয়ে সংসার করা সম্ভব?
অঙ্ক দোকানে গিয়ে জীবনে হিসাব মেলাতে পারল না, কারণ সে পঁচিশ পয়সা ৪৩ টা, পঞ্চাশ পয়সা ২৯ টা আর এক টাকা ৬৭টা নিয়ে বাজারে গেছে। তাকে দোকানদার খুব গালি দিয়েছে, কারণ এখন পঁচিশ পয়সা আর চলে না। এদিকে সে তিনটি আপেলের দামে একটা কুমড়ো, চারটি ঝিঙ্গের দামে একডজন ডিম আর কুড়িটা লাউয়ের দামে ১০টা তরমুজ কিনে বাড়ি এসেছে। বউ আরো গালি দিলো, কারণ কুমড়ো আর ডিম দিয়ে তরকারী কিই বা হবে? আর ১০টা তরমুজ?? কে এত তরমুজ একসাথে কেনে?

তারপর বাথরুমে যে বাথটব বসিয়েছে, সেই বাথটবে অঙ্কবৌদি স্নান করতে পেলো না একবারো, কারণ যে স্পিডে জল ঢুকছে তার ৩/৪ স্পিডে জল বেরিয়ে যাচ্ছে, আর চারটে স্কুলের খোকারা সেই বাথটবের চারদিকে বসে মাপার চেষ্টা করে চলেছে, এভাবে স্নান করা যায়? কলাটা পচে গেল ওদিকে, অপেক্ষা করে করে। কখন বাঁদর তেল মাখানো লাঠিতে উঠে তাকে ফাইন্যালি খেতে পারবে।
অঙ্কবৌদির জীবনে অশান্তি এমন একটা লোককে বিয়ে করে। কোথাও বেড়াতে যেতে পারে না শান্তিতে, গেলেই গাড়ি প্রথম পঞ্চাশ কিলোমিটার ৪০ কিমি/ঘন্টা, তারপরের পঞ্চাশ কিলোমিটার ২০কিমি/ঘন্টা আর তারপরের পঞ্চাশ কিলোমিটার ১০কিমি/ঘন্টায় যায়। দীঘা পৌঁছতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। তারপর ভাগাভাগি করে কোল্ডিংক্স খাবে, ব্যাস, অঙ্ককাকু মাপার কিস্যু আনেনি, এবার একটা ৮০০মিলির বোতল, একটা ৩০০মিলির বোতল আর একটা হাফ লিটারের বোতলে ঢালাঢালি করে ভাগাভাগি করতে করতে রাত কাবার।
আরে বদমাস(BODMAS) ছাড়া যাকে সমাধান করা যায় না, সে আবার নিজেকে সরল বলে ঘোষণা করার চেষ্টা করে।
এর থেকে ভাই বাংলা অনেক ভালো, ভৃগুর দাদু নৃপেনবাবু, যতই সোজা কথাকে কঠিন করে বলুন না কেন, ঘাস যতই তৃণ হোক, হরিন যতই মৃগ হোক, অঙ্কবৌদি ভাবছেন ওঁর সাথেই বাকী জীবন কাটাবেন। ঘেন্না ধরে গেল গা...

Comments