বোনু

বুইলেন কিনা, প্রথম দর্শনেই প্রেম হয় কিনা আজও জানি না, তবে প্রথম দর্শনেই "আহা ওটি থাক, আমি পুষবো" এইরকম মনোভাব আমার হয়ে থাকে। এই জনমে দুইবার হয়েছে এখনো অবধি। একজন হলেন আমার মাসতুতো বোন বুক্কা আরেকজন হলেন আমার ননদ । প্রথমজনকে প্রথমে দেখেছিলাম গোলাপি তোয়ালে মুড়ি দিয়ে ঘুমু করার সময়, তখন তাঁর বয়স ২-৩ ঘন্টা আর আমার ১৩ বছর। দ্বিতীয়জনকে দেখেছিলাম তাঁর জন্মদিনের ছবিতে প্রথমবার, তখন তাঁর ২২ আমার ২৭। ব্যাস, চট করে মনস্থির করে ফেললাম যে এঁর দাদার ঘরেই আমাকে যেতে হচ্ছে।


প্রথম জনের আপাতত উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট চলছে। তাই তাঁকে এই আলোচনা থেকে বাদ দিচ্ছি, পড়াশোনার সময়ে ফেসবুক ঘাঁটুক আমি চাইনে। ( যদিও আমার উচ্চমাধ্যমিকের সময়ে ফেসবুক থাকলে আমি পাশ করতুম না শিওর ) আজকে কথা হোক দুই নম্বর জনকে নিয়ে। মনুষ্যরূপী এইরকম ম্যাওপুষি যে পৃথিবীতে থাকতে পারে তা আগে আমার জানা ছিল না। যেমন মিষ্টি দেখতে তেমন তুলোর মত নরম মন এর সাথে রয়েছে সাংঘাতিক টাইপের কাজপাগলামি আর বজ্রকঠিন জেদ। যদিও সেই জেদটা চট করে দেখা যায় না, আর দেখা গেলেও শুভবুদ্ধির ক্ষেত্রেই উদয় হয়। ম্যাওপুষি বললাম বলে খুব নরম মানুষ ভাববেন না, দরকার হলে দস্তুরমত গররর ফ্যাঁসও করতে পারে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে করে না। কারণ আমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বউদি আর আমার ননদ যে সাংঘাতিক ভালো হবে, সেকি আর আলাদা করে বলতে হবে?
এই যে আমি বই চাই বই চাই করে কান্নাকাটি করলাম কয়েকদিন ফেসবুকে, আপনারা কিন্তু কেউ একটুও বই দিলেন না। কিন্তু আমার ননদ এসে আমাকে দু-দুটো বই দিয়ে গেল। না না, ভাববেন না, বই পেয়েছি বলে এইসব কথা লিখছি। আসলে কাল রাতে ওর প্রিয় আলুরদম রান্না করেছি। আর তারপর থেকেই ওর জন্য প্রচন্ড মনখারাপ করছে। বিয়ের পর ভালোমানুষ শাশুড়ি আর বন্ধু ননদ পাওয়া এক ভাগ্যের কথা। আমার ভাগ্যে যে বোনের মত ননদ লেখা আছে সেটা ভাবিনি কোনোদিন (অবশ্য তারজন্য আমার ঠিক সময়ে নেওয়া সঠিক সিদ্ধান্তও দায়ী)। রবিবার শাউড়ি আর ননদ আসছেন, খুব অপেক্ষা করছি সেই দিনটার জন্য। আর ভালো শ্বশুরবাড়ি পাওয়ার জন্য ফ্রিতে একজন থ্যাঙ্কু নিয়ে যাবে। থ্যাঙ্কু বরবাবু।

Comments