প্রথম ক্রাশ


আমার প্রথম এবং গুরুতর ক্রাশ হল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পুর্ব-পশ্চিম উপন্যাসের অতীন। আমি সাংঘাতিক টম বয় ছিলাম, ক্লাস সেভেনে বয়েজকাট করে ফেলেছি। গার্লস স্কুলে পড়ার সুবাদে ছেলেরা খুব একটা সহজলভ্যও ছিল না। প্রচুর বই পড়া পাকা ছিলাম। এমনকি একবার অন্য একজনের প্রেমের কেসে আমার গার্জেনকল হয়েছিল (পরে এটাও বিস্তারিত জানাব) সেখানেও আমার মা গিয়ে বড়দিকে বললেন "আপনি শিওর যে আমার মেয়েই (ছেলেদের লাইন মারছে)? ব্র্যাকেটের কথাটা উহ্য ছিল। বড়দিও শিওর ছিলেন এর দ্বারা এইসব হবেনা, তাই জেনারেল দুষ্টুমি আর প্রেমে সাহায্য এই অপরাধে আমি এক সপ্তাহ সাসপেন্ড হলাম, ( কি মজায় যে কেটেছিল সেই সপ্তাহটা)


সেই আমি দুম করে প্রেমে পড়ে গেলাম। হেবি রোমান্টিক ছিলাম তো। ডায়রিতে লিখেওছিলাম যে আমি অতীনকেভালোবাসি। সেই দেখে আবার রিঙ্কিদিদি নিজের বন্ধু অতীনের কথা ভেবেটেবে কেঁদেকেটে একশা। রিঙ্কিদিদি কান্নার কোনো সুযোগ ছাড়ত না, এই কান্নার কারণ হল রিঙ্কিদিদির বন্ধু অতীনদা, যাকে আমিও হেবি পছন্দ করি, কিন্তু একদমই প্রেম না, সেই অতীনদার একটা গার্লফ্রেন্ড ছিল। (তাহলে দিদির ছোট্টবোনের মন ভেঙ্গে যাবে) আর আগে আবার জন্মজন্মান্তর টাইপের প্রেম হত। রিঙ্কিদিদি আট বছর প্রেম করে সেই সন্দীপনদাকেই বিয়ে করল, আর অতীনদাও সেই প্রেমিকাকেই। যাই হোক। আমি অতীনের হেবি প্রেমে পড়ে গেছিলাম, ইয়ার্কি না, প্রায় বছর দুই। ওইজন্যেই গুরুতর বলছি।
বেশ "মরন রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান" ফিলিং আসত। জ্যান্ত ছেলে দ্বারা হৃদয় ব্রেকের একটা সম্ভাবনা থাকে। আমার কিছুই ছিল না। (স্পয়েলার এলার্ট) তবে অলিকে ডিচ করে শর্মিলাকে বিয়ে করা আমি মেনে নিতে পারিনি বহুদিন। সে আর কি করা যাবে। প্রেমের অন্ত হল কলেজে গিয়ে। তখন হঠাত দেখি আমি ছাড়া বাকি সবার একটা করে বয়ফ্রেন্ড আছে। অতীনকে বিদায় দিতে বাধ্য হলুম। আর আমি তো অখাদ্য দেখতে, তাই অনলাইনে বয়ফ্রেন্ড খোঁজা চালুও করলাম। কিন্তু সে অন্য গল্প।

Comments

  1. কে জানে ভাই এটি ক্রাস না ক্রাশারের গল্প । তবে আমি ক্যাবলাটে মতো দেখতে ছিলাম ও আছি । সেই জন্য আমি ছিলাম প্রেমপত্র-লেখক । এক প্লেট হ্যামলেট আর ফিশরোলের দক্ষিণা নিয়ে অনেক দাদা-দিদি কে প্রেমপত্র লিখে দিয়েছিলাম আর এই নিয়ে তাঁরা তাদের প্রেমসাধনায় সিদ্ধি লাভ ও করেছিলেন।

    ReplyDelete

Post a Comment