স্বীকারক্তি

বয়ফ্রেন্ডলোগো এবং গার্লফ্রেন্ডলোগো এবং তাদের লাইফ পার্টনার মিত্রোঁ, কটা স্বীকারোক্তি করে পেট হালকা করছি।
১. সাংঘাতিক টাইপের স্বীকারোক্তি করার সৎ সাহস আমার নেইকো, তাই কিছু মিডিয়াম টাইপের স্বীকারোক্তি করছি। এইটে আমার পোথম স্বীকারোক্তি।


২. আমি হেবি অহংকারী, যদিও তার কোন কারণ নেই। সেইজন্যেই আমার অন্তত একটা রিক্সাওয়ালা বা অটোওয়ালার সাথে প্রেম করা হয়ে উঠল না। আমি চিরকাল আগে লোকের পড়াশোনা, সেন্স অফ হিউমর আর সামাজিক স্টেটাস দেখে এলাম।
৩. আমার মায়ের ধারণা যে আমি দীঘা গেলেই ডুবে যাব। তাই আমাকে জীবনে দীঘা যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমি ঢপ মেরে অন্তত তিন থেকে চারবার দীঘা গেছি, একবার মন্দারমনি গেছি।
৪. কলেজে আমাকে এক জায়গায় প্রাইভেটে পড়ার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল। বলা বাহুল্য আমি সেখানে দুইদিন গেছিলাম, তারপর সেই কোচিং সেন্টারের নাম করে বেরোতাম, তিনটে টিউশনি করতাম, ১২০০ টাকা পেতাম। এছাড়া ওই কোচিং এর মাইনে ছিল ১৮০০ টাকা সেটাও আমার পকেটেই যেত। এই টাকা দিয়ে আমি হেব্বি খেতাম ( বৃহস্পতিবার , কারণ সেদিন কোচিং থাকত, কিন্তু পড়ানো থাকত না) এবং গানের এমপিথ্রি বা সিনেমার সিডি কিনতাম।
৫. আমি শুধুমাত্র আনলিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চাইতাম বলে প্রথম চাকরিতে জয়েন করি। বাবার দেওয়া লিমিটেড কানেকশনে আমার চলছিল না। নিজের রোজগারে আনলিমিটেড নেট ব্যবহার করা শুরু করি।
৬. বাবা বাড়ি না থাকলে ভিডিওগেম খেলতাম ( ভিডিওগেম আমাকে কিনে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু শুধুমাত্র রবিবার ২ ঘন্টা খেলার অনুমতি ছিল, যেটা যথেষ্ট নয়)। বাবা সাইকেলে করে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরতেন, তখন সাইকেলের আওয়াজ পেলেই সব তুলে টুলে বই পড়ার এক্টিং করতাম।
৭. বাবার পকেট থেকে বহু ঝেড়েছি, কিন্তু বরের পকেট থেকে না। আমার হেবি অহংকার আগেও বলেছি, নিজে চাকরি না করে বরকে আবদার করতে বা টাকা ঝাড়তে আমার ইগোতে হেবি লাগে। চাকরি যখন করতাম এন্তার বাজে খরচ করেছি, একটুও অনুতপ্ত নই, আবার জয়েন করলে আবার সেম কাজ করব।
৮. শুধুমাত্র গল্পের বই পড়া শেষ হয়নি বলে বহুবার অফিস কামাই করেছি কাঁচা ঢপ মেরে। একবার দিদিমা কে নার্সিং হোমে পাঠিয়েছি, একবার বলেছি সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ তাই কোর্ট যেতে হবে।
৯. উচ্চমাধ্যমিকে কেমিস্ট্রি পরীক্ষার আগের দিন কেবলমাত্র পড়তে ইচ্ছে করছিল না বলে আমি শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় সমগ্র নিয়ে সারা সন্ধ্যা কাটিয়েছিলাম, ফলে কেমিস্ট্রি ফার্স্ট পেপারে ১৯ পাই। সেকেন্ড পেপারটা এমনিতেই ভালো পারতাম তাই বেঁচে গেছি। কলেজে ভর্তির সময় প্রিন্সিপাল জানতে চাইলে আমি জানিয়েছিলাম আমার ম্যালেরিয়া হয়েছিল তাই পড়তে পারিনি।
১০. আমি আর আমার বন্ধু দুইজন পরীক্ষা বাংক করে ন্যাশেনাল মিউজিয়ামে ঘুরতে গেছিলাম। কারণ পরীক্ষার দিন আমাদের প্র্যাকটিকাল খাতা জমা করার ছিল, এবং সেই খাতা আমাদের কমপ্লিট করা হয়নি। পরে খাতা জমা দি।
আপনারা যারা ভাবছেন এগুলো খুবই ছোট এবং মাইল্ড স্বীকারোক্তি, তাঁরা আমার মা কে চেনেন না। একেবারেই চেনেন না। বাপরে। আমাকে যারা চেনেন, তাঁদের কাছে অনুরোধ, পিলিজ মাম্মিসে না ক্যাহেনা।
এক বছর আগে লিখেছিলাম। এতদিন মায়ের থেকে লুকিয়ে রেখেছি। কিন্তু এখন অসুখের পরে তো, মা নাও বকতে পারে, সেই আশায় সামনে আনলাম।

Comments