ছাগলকাহিনী


আমার শ্বশুরমশাই চুঁচুড়ায় হুগলি কলেজিয়ট স্কুলের স্যার ছিলেন। আর আমার কত্তা সেখানকারই ছাত্র। তার ফলে যেকোনো দুষ্টুমির ( যেটা তিনি প্রায়ই করে থাকতেন, কারণ তিনি খুবই লক্ষ্মীছেলে ছিলেন) তিনি চারবার শাস্তি পেতেন।
১. যে দুষ্টুমি করেছেন তার শাস্তি স্কুলের স্যারের থেকে
২. অশোকস্যারের ছেলে হয়ে দুষ্টুমি করেছেন তার শাস্তি, স্কুলের স্যারের থেকে
৩. বাবার কাছে বকুনি
৪. অশোকস্যারের নাম বদনাম হয়ে গেলো এই ছেলের জন্য তাই আরেকটু ঝাড় অশোকস্যারের থেকে।

তাতে তাঁর মনে ক্ষোভ জন্মায়নি তো! আজকাল যেমন কথায় কথায় লোকের অভিমান হয়ে যায়। 

বাবার ছিলো ডে সেকশন, আর বাবির মর্নিং। চুঁচুড়া কলেজিয়েট স্কুলের পাশেই গঙ্গার ঘাট আছে, সেখানে ছুটির সময়ে তিনি ছাগল আদর করতে যেতেন। ছাগলদের কানে হাত চাপা দিলে তারা নাকি নিঃশব্দে আদর খেতো, গুঁতোতে আসত না। তিনি আর তাঁর বন্ধু পাতাটাতা খাওয়াতেন। বাবাও নিজের ছেলেকে মোক্ষম চিনতেন। রোজ ইস্কুলে এলেই যে রিক্সা করে বাবি ফেরত যেতে, সেই রিক্সাওয়ালা কমপ্লেন করতেন যে ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনিও সময় নষ্ট না করে, গঙ্গার ঘাটে গিয়ে দেখতেন, ছেলে ছাগলকে পাতা খাওয়াচ্ছে। কান ধরে রিক্সায় এনে বসিয়ে দিতেন।
এইরূপে গোকুলে কেষ্টঠাকুর তিলে তিলে চন্দ্রকলার ন্যায় বৃদ্ধি পাচ্ছিলেন।

Comments